০৫:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

কক্সবাজারে ১২ হাজার একর ভূমি ফেরত পাচ্ছে বন বিভাগ-রিজওয়ানা

সিবিসি নিউজ রিপোর্ট :

বিভিন্ন সংস্থার নামে বরাদ্দ দেওয়া কক্সবাজারের প্রায় ১২ হাজার একর ভূমি বন বিভাগের কাছে ফেরত দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তিনি বলেছেন, “কক্সবাজারের নদী, বনভূমি ও সি-বিচ দখল ও দূষণমুক্ত করা হবে। প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকাতে (ইসিএ) অনুমতি ছাড়া কোনো কিছু নির্মাণ করা যাবে না। পরিবেশ অধিদপ্তর, বন বিভাগ এবং জেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোনো সরকারি বা বেসরকারি নির্মাণ বিবেচনায় নেওয়া হবে না।”

বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজারের বাকখালী নদীর তীরে পৌরসভার ময়লার ভাগাড় পরিদর্শনের পর তিনি এ কথা বলেন।

রিজওয়ানা হাসান বলেন,“বিধি লঙ্ঘিত হলে তা আইনগতভাবে মোকাবিলা করা হবে। সি-বিচ দখল ও দূষণের লাগাম এখনই না টানলে এটি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তিতে পরিণত হবে। এটা হতে দেওয়া হবে না।”

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের পাশে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ একাডেমির জন্য বনভূমির ৭০০ একর জমির বরাদ্দ গত বছর বাতিল করা হয়।

সেই প্রসঙ্গ টেনে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, “কক্সবাজারের ৭০০ একর বনভূমি ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। এক ব্যক্তি ১৫০ একর বনভূমিতে বিল্ডিং নির্মাণ করছে, সেটিও বন্ধ করা হচ্ছে।

“ফুটবল একাডেমির জন্য বরাদ্দ ২০ একর জমি ফেরত আনা হচ্ছে। দায়িত্ব নেওয়ার পর ৫১ একর জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সোনাদিয়া দ্বীপে বেজার জন্য বরাদ্দকৃত জমিও বন বিভাগের আওতায় ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলছে।”

এ সময় নৌ-উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাঁকখালীকে দখলমুক্ত করতে যা করা প্রয়োজন, তাই করা হবে।

“ভালো হবে- যারা দখল করেছেন, তারা যদি নিজেরা সরে যান। তাহলে ক্ষতি হবে না। যেখানে আদালতের স্টে অর্ডার আছে, সেগুলো ছাড়া বাকিগুলো দখলমুক্ত করব। এখানে আর কোনো প্রশ্ন নাই।”

দখলের কারণে কক্সবাজারে নদীবন্দর করা যাচ্ছে না মন্তব্য করে সাখাওয়াত বলেন, “স্থানীয় প্রশাসনকে বলা হয়েছে- নদীর সীমানা নির্ধারণ করার পর উচ্ছেদ শুরু হবে। নদীবন্দর যে করব, তার জন্য নদী তো লাগবে।”

আগামী ৭-৮ দিনের মধ্যে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানান তিনি।

পানি সম্পদ সচিব নাজমুল আহসান, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন, পুলিশ সুপার সাইফউদ্দীন শাহীন, অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন, কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন, কক্সবাজার পৌরসভার প্রশাসক রুবাইয়া আফরোজ, বিআইডব্লিউটিএ, বন বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, এদিকে, কস্তুরাঘাট এলাকার বাসিন্দা এড. মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, বাকখালী নদীর পাশে ব্যক্তি মালিকানাধীন রেজিষ্ট্রার্ড জমি রয়েছে অনেকের। ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ অভিযান চালিয়ে কস্তুরাঘাটের চার শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জেলা প্রশাসন। তখন দখলমুক্ত করা হয় বাঁকখালী নদীর ৩০০ একরের বেশি প্যারাবনের জমি। অভিযান চলাকালে বৈধ মালিকানার জমিতে গড়ে তোলা স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় জেলা প্রশাসক সহ অভিযানে নেতৃত্ব দেয়াদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

এছাড়াও আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় কেন আদালত অবমাননা অভিযোগ আনা হবে না মর্মে উচ্চ আদালত থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়েছিল।

স্থানীয়রা জানান, বাঁকখালী নদীর প্রতিটি ইঞ্চি
উচ্ছেদ অভিযানের আওতায় থাকবে সেটা আশা করছি। তবে, ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি ও বাঁকখালী নদীর জমি চিহ্নিত করে আলাদা করা হোক। এরপরই নদীর জমি চিহ্নিত করে উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান চলুক।
তবে, সুবিধা নিয়ে বিশেষ মহলকে সুবিধা দেওয়ার সুযোগ জনগণ দিবে না।
বাঁকখালী নদীর সীমানা নির্ধারণ করুন। বড়বড় স্থাপনা চিহ্নিত করুন। বাঁকখালীর স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে বাণিজ্য বন্ধ করুন। প্রকৃত বাঁকখালীর সীমানা নির্ধারণ করে, তবেই উচ্ছেদ করা হোক, এমনটাই দাবী স্থানীয়দের।

 

 

জনপ্রিয়

নান্দাইল পুলিশের তৎপরতা এবং একটি ‘মিসটেক’

কক্সবাজারে ১২ হাজার একর ভূমি ফেরত পাচ্ছে বন বিভাগ-রিজওয়ানা

১২:৪৫:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

সিবিসি নিউজ রিপোর্ট :

বিভিন্ন সংস্থার নামে বরাদ্দ দেওয়া কক্সবাজারের প্রায় ১২ হাজার একর ভূমি বন বিভাগের কাছে ফেরত দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তিনি বলেছেন, “কক্সবাজারের নদী, বনভূমি ও সি-বিচ দখল ও দূষণমুক্ত করা হবে। প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকাতে (ইসিএ) অনুমতি ছাড়া কোনো কিছু নির্মাণ করা যাবে না। পরিবেশ অধিদপ্তর, বন বিভাগ এবং জেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোনো সরকারি বা বেসরকারি নির্মাণ বিবেচনায় নেওয়া হবে না।”

বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজারের বাকখালী নদীর তীরে পৌরসভার ময়লার ভাগাড় পরিদর্শনের পর তিনি এ কথা বলেন।

রিজওয়ানা হাসান বলেন,“বিধি লঙ্ঘিত হলে তা আইনগতভাবে মোকাবিলা করা হবে। সি-বিচ দখল ও দূষণের লাগাম এখনই না টানলে এটি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তিতে পরিণত হবে। এটা হতে দেওয়া হবে না।”

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের পাশে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ একাডেমির জন্য বনভূমির ৭০০ একর জমির বরাদ্দ গত বছর বাতিল করা হয়।

সেই প্রসঙ্গ টেনে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, “কক্সবাজারের ৭০০ একর বনভূমি ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। এক ব্যক্তি ১৫০ একর বনভূমিতে বিল্ডিং নির্মাণ করছে, সেটিও বন্ধ করা হচ্ছে।

“ফুটবল একাডেমির জন্য বরাদ্দ ২০ একর জমি ফেরত আনা হচ্ছে। দায়িত্ব নেওয়ার পর ৫১ একর জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সোনাদিয়া দ্বীপে বেজার জন্য বরাদ্দকৃত জমিও বন বিভাগের আওতায় ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলছে।”

এ সময় নৌ-উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাঁকখালীকে দখলমুক্ত করতে যা করা প্রয়োজন, তাই করা হবে।

“ভালো হবে- যারা দখল করেছেন, তারা যদি নিজেরা সরে যান। তাহলে ক্ষতি হবে না। যেখানে আদালতের স্টে অর্ডার আছে, সেগুলো ছাড়া বাকিগুলো দখলমুক্ত করব। এখানে আর কোনো প্রশ্ন নাই।”

দখলের কারণে কক্সবাজারে নদীবন্দর করা যাচ্ছে না মন্তব্য করে সাখাওয়াত বলেন, “স্থানীয় প্রশাসনকে বলা হয়েছে- নদীর সীমানা নির্ধারণ করার পর উচ্ছেদ শুরু হবে। নদীবন্দর যে করব, তার জন্য নদী তো লাগবে।”

আগামী ৭-৮ দিনের মধ্যে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানান তিনি।

পানি সম্পদ সচিব নাজমুল আহসান, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন, পুলিশ সুপার সাইফউদ্দীন শাহীন, অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন, কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন, কক্সবাজার পৌরসভার প্রশাসক রুবাইয়া আফরোজ, বিআইডব্লিউটিএ, বন বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, এদিকে, কস্তুরাঘাট এলাকার বাসিন্দা এড. মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, বাকখালী নদীর পাশে ব্যক্তি মালিকানাধীন রেজিষ্ট্রার্ড জমি রয়েছে অনেকের। ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ অভিযান চালিয়ে কস্তুরাঘাটের চার শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জেলা প্রশাসন। তখন দখলমুক্ত করা হয় বাঁকখালী নদীর ৩০০ একরের বেশি প্যারাবনের জমি। অভিযান চলাকালে বৈধ মালিকানার জমিতে গড়ে তোলা স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় জেলা প্রশাসক সহ অভিযানে নেতৃত্ব দেয়াদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

এছাড়াও আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় কেন আদালত অবমাননা অভিযোগ আনা হবে না মর্মে উচ্চ আদালত থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়েছিল।

স্থানীয়রা জানান, বাঁকখালী নদীর প্রতিটি ইঞ্চি
উচ্ছেদ অভিযানের আওতায় থাকবে সেটা আশা করছি। তবে, ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি ও বাঁকখালী নদীর জমি চিহ্নিত করে আলাদা করা হোক। এরপরই নদীর জমি চিহ্নিত করে উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান চলুক।
তবে, সুবিধা নিয়ে বিশেষ মহলকে সুবিধা দেওয়ার সুযোগ জনগণ দিবে না।
বাঁকখালী নদীর সীমানা নির্ধারণ করুন। বড়বড় স্থাপনা চিহ্নিত করুন। বাঁকখালীর স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে বাণিজ্য বন্ধ করুন। প্রকৃত বাঁকখালীর সীমানা নির্ধারণ করে, তবেই উচ্ছেদ করা হোক, এমনটাই দাবী স্থানীয়দের।