০৫:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

লন্ডভন্ড বেড়িবাঁধে অরক্ষিত দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া

সিবিসি নিউজ রিপোর্ট।

কক্সবাজারের উপকূলীয় দ্বীপ কুতুবদিয়ায় ১৯৯১ সালের ২৯শে এপ্রিল প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে লন্ডভন্ড হওয়া ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ ৩৫ বছরেও মেরামত হয়নি। কুতুবদিয়া দ্বীপটি ভয়াবহ ভাঙন ও জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকিতে পড়েছে। বর্তমানেও চলছে জোয়ার ভাটা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসন্ন বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই দ্বীপের চারপাশে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার না হলে, জীবন-জীবিকা, আবাসন মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহাদাত হোছাইন জানিয়েছেন, একসময় ১২৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের কুতুবদিয়া দ্বীপ ভাঙনে ক্ষয়ে এখন মাত্র ৬২ বর্গকিলোমিটারে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। প্রতিবছর বেড়িবাঁধ ভেঙে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি প্রবেশ করে কৃষি জমি, লবণের মাঠ ও বসতবাড়িতে বিপুল ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। প্রতিবছরই সাগরে বিলীন হচ্ছে দ্বীপের ভূমি।

তিনি আরও জানান, সাগরে মাছ ধরা ছাড়াও দ্বীপের মানুষের বড় একটি পেশা লবণ চাষ ও কৃষি কাজ। কিন্তু বর্ষা আসলেই বাঁধ ভেঙে সাগরের নোনা পানিতে ভেসে যায় সব। নোনা পানির কারণে পরিবর্তীতে আর ফসলও হয়না। এভাবে বছরের পর বছর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছে দ্বীপের বাসিন্দারা।

দ্বীপবাসীর অভিযোগ,১৯৯১ সালে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে জেলার অন্যান্য উপকূলীয় এলাকার মতো দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায়ও ব্যাপক জান মাল ও বেড়িবাঁধের ক্ষয়ক্ষতি হয়। অরক্ষিত বেড়িবাঁধ দিয়ে বছরের পর বছর জোয়ার ভাটা চলে আসছে। বিগত সরকারের সময়ে বেড়িবাঁধ সংস্কারের নামে শুধু লুটপাট হয়েছে। তাই, বর্তমান সরকারের কাছে স্থানীয়দের দাবী, কুতুবদিয়াকে রক্ষা করতে হলে এর চারপাশে দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণই একমাত্র সমাধান বলে জানান স্থানীয়রা।

বড়ঘোপ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আ ন ম শহীদ উদ্দিন ছোটন জানান, বর্ষা আসলেই ঘুমভাঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষের। নাম মাত্র কাজ করে সরকারী অর্থ অপচয় করে। এ কাজ জনগণের কোন কাজেই আসছে না। কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ার কারণেই দ্বীপের এমন অবস্থা বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দুষলেন সাবেক এই জনপ্রতিনিধি ।

বর্ষায় লোকালয় ডুবে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমনকি বিলীন হওয়ার পথে দেশের প্রথম বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। যেটি এখানে স্থাপন করা হয়েছিলো ২০০৭ সালে।
তবে, জিও ব্যাগদিয়ে ভাঙ্গন ঠেকানো ও বর্ষার আগেই টেকসই বেড়িবাঁধ স্থাপনসহ নানা উদযোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের
নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম।

সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে শুধু দ্বীপের অস্তিত্বই নয়, সরকারের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়ে বিশাল ক্ষতির শিকার হতে পারে, অভিমত স্থানীয়দের।

জনপ্রিয়

নান্দাইল পুলিশের তৎপরতা এবং একটি ‘মিসটেক’

লন্ডভন্ড বেড়িবাঁধে অরক্ষিত দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া

০৯:০১:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

সিবিসি নিউজ রিপোর্ট।

কক্সবাজারের উপকূলীয় দ্বীপ কুতুবদিয়ায় ১৯৯১ সালের ২৯শে এপ্রিল প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে লন্ডভন্ড হওয়া ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ ৩৫ বছরেও মেরামত হয়নি। কুতুবদিয়া দ্বীপটি ভয়াবহ ভাঙন ও জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকিতে পড়েছে। বর্তমানেও চলছে জোয়ার ভাটা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসন্ন বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই দ্বীপের চারপাশে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার না হলে, জীবন-জীবিকা, আবাসন মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহাদাত হোছাইন জানিয়েছেন, একসময় ১২৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের কুতুবদিয়া দ্বীপ ভাঙনে ক্ষয়ে এখন মাত্র ৬২ বর্গকিলোমিটারে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। প্রতিবছর বেড়িবাঁধ ভেঙে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি প্রবেশ করে কৃষি জমি, লবণের মাঠ ও বসতবাড়িতে বিপুল ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। প্রতিবছরই সাগরে বিলীন হচ্ছে দ্বীপের ভূমি।

তিনি আরও জানান, সাগরে মাছ ধরা ছাড়াও দ্বীপের মানুষের বড় একটি পেশা লবণ চাষ ও কৃষি কাজ। কিন্তু বর্ষা আসলেই বাঁধ ভেঙে সাগরের নোনা পানিতে ভেসে যায় সব। নোনা পানির কারণে পরিবর্তীতে আর ফসলও হয়না। এভাবে বছরের পর বছর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছে দ্বীপের বাসিন্দারা।

দ্বীপবাসীর অভিযোগ,১৯৯১ সালে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে জেলার অন্যান্য উপকূলীয় এলাকার মতো দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায়ও ব্যাপক জান মাল ও বেড়িবাঁধের ক্ষয়ক্ষতি হয়। অরক্ষিত বেড়িবাঁধ দিয়ে বছরের পর বছর জোয়ার ভাটা চলে আসছে। বিগত সরকারের সময়ে বেড়িবাঁধ সংস্কারের নামে শুধু লুটপাট হয়েছে। তাই, বর্তমান সরকারের কাছে স্থানীয়দের দাবী, কুতুবদিয়াকে রক্ষা করতে হলে এর চারপাশে দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণই একমাত্র সমাধান বলে জানান স্থানীয়রা।

বড়ঘোপ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আ ন ম শহীদ উদ্দিন ছোটন জানান, বর্ষা আসলেই ঘুমভাঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষের। নাম মাত্র কাজ করে সরকারী অর্থ অপচয় করে। এ কাজ জনগণের কোন কাজেই আসছে না। কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ার কারণেই দ্বীপের এমন অবস্থা বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দুষলেন সাবেক এই জনপ্রতিনিধি ।

বর্ষায় লোকালয় ডুবে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমনকি বিলীন হওয়ার পথে দেশের প্রথম বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। যেটি এখানে স্থাপন করা হয়েছিলো ২০০৭ সালে।
তবে, জিও ব্যাগদিয়ে ভাঙ্গন ঠেকানো ও বর্ষার আগেই টেকসই বেড়িবাঁধ স্থাপনসহ নানা উদযোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের
নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম।

সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে শুধু দ্বীপের অস্তিত্বই নয়, সরকারের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়ে বিশাল ক্ষতির শিকার হতে পারে, অভিমত স্থানীয়দের।