১২:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

ঈদের লম্বা ছুটিতে কক্সবাজারে ৮০০ কোটি টাকার ব্যবসা!

মোহাম্মদ ইসহাক,  স্টাফ রিপোর্টার।। 

বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকতের নগরী কক্সবাজার। সরকারী কিংবা সাপ্তাহিক ছুটিসহ সবসময়ই পর্যটকে ভরপুর থাকে কক্সবাজার।
ঈদুল আযহার দীর্ঘ ছুটিতে অন্তত ৭ থেকে ৮ লাখ মানুষ কক্সবাজার ভ্রমণ করেছে। এতে করে কক্সবাজারে বিভিন্ন সেক্টরে ব্যবসা হয়েছে ৭/ ৮ কোটি টাকা।
তবে, কক্সবাজার আবাসিক হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার জানান, সাত দিনে আবাসিক হোটেলগুলোতে যেসব পর্যটক অবস্থান নিয়েছেন, তাদের হিসাব অনুযায়ী মোট সংখ্যা ৪ লাখের বেশি হবে না।
ঈদ উপলক্ষে কক্সবাজারে সাত দিনে ঘুরেছেন প্রায় ৪ লাখ পর্যটক। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও সংগঠনগুলোর ধারণা, এই সময়ে জেলার পর্যটন খাতে অন্তত ৪০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজারে ঈদের দিন ৭ জুন থেকে ১৩ জুন শুক্রবার পর্যন্ত পর্যটকের ব্যাপক সমাগম ঘটে। সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে ভিড় করেন হাজারো পর্যটক। এছাড়াও জেলার পর্যটন স্পট গুলোতেও পর্যটকরা ঘুরে বেড়িয়েছে।

তারা জেট স্কি, বিচ বাইক, ঘোড়ার পিঠে চড়া, কিটকট ভ্রমণ ও ফটোগ্রাফিতে অংশ নেন। পাশাপাশি তারা শুটকি, বার্মিজ পণ্য, শামুক-ঝিনুক, মুক্তার গহনা, আচারসহ নানা সামগ্রী কেনাকাটায়ও মেতে ওঠেন। ফলে ব্যস্ততা বেড়ে যায় সৈকতপাড়ের দোকানদার, হকার, ফটোগ্রাফার, জেট স্কি ও বিচ বাইক চালকদের।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, ‘পর্যটন সংশ্লিষ্ট পাঁচটি খাতে ব্যবসা বিবেচনায় নেয়া যায়—আবাসিক হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউজ, রেস্তোরাঁ ও অন্যান্য খাবারের দোকান, সৈকতকেন্দ্রিক সেবা (যেমন: কিটকট, বাইক, ঘোড়া, ফটোগ্রাফি), দোকানপাট (যেমন: শুটকি, বার্মিজ পণ্য), এবং পরিবহন (দূরপাল্লার ও অভ্যন্তরীণ)।’

তিনি জানান, কক্সবাজারে পর্যটকের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণে কোনো সরকারি বা বেসরকারি পরিসংখ্যান না থাকলেও ধারণা অনুযায়ী, “ঈদুল ফিতরে প্রায় ১২ লাখ পর্যটক এসেছিল এবং ১৩টি খাতে ১,০০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছিল। এবারে ঈদুল আযহার ছুটিতে ৭। ৮ লাখ পর্যটক আশা করছি এবং সবমিলিয়ে অন্তত ৭০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকার ব্যবসা হবে বলে বিশ্বাস করি।”

“কেবল হোটেল নয়, রেস্টুরেন্ট, দোকানপাট, বিচ অ্যাকটিভিটিজ, লোকাল ট্রান্সপোর্ট এবং অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলোতেও জমজমাট ব্যবসা হচ্ছে” -বলেন মি. চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘সরকারিভাবে আবাসিক হোটেলগুলোর তথ্য অনলাইনে সংগ্রহের মাধ্যমে পর্যটকের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা সম্ভব।’

কক্সবাজার আবাসিক হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার জানান, ঈদের প্রথম দিন কিছুটা কম ভিড় থাকলেও পরবর্তীতে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ে। সাত দিনে আবাসিক হোটেলগুলোতে যেসব পর্যটক অবস্থান নিয়েছেন, তাদের হিসাব অনুযায়ী মোট সংখ্যা ৪ লাখের বেশি হবে না।

কক্সবাজারে ৫০০টিরও বেশি হোটেল, রিসোর্ট, কটেজ ও গেস্ট হাউস রয়েছে, যেগুলোর দৈনিক ধারণক্ষমতা প্রায় ১,৮৭,০০০ জন বলে তথ্য দিয়ে হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতি।

হোটেল মালিকরা জানান, ১২ থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ৭০ হাজারের বেশি পর্যটক আসবেন। এসবসব মিলিয়ে এবারের ঈদে মোট পর্যটকের সংখ্যা ৯ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন তারা।

বর্তমানে জেলার পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউজ, কটেজ ও রিসোর্ট প্রায় পূর্ণ। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে পর্যটক সেবায় চলছে ব্যাপক ব্যস্ততা। একই সঙ্গে স্থানীয় রেস্টুরেন্টগুলোতেও জমজমাট অবস্থা। ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙা থাকায় খুশি ব্যবসায়ীরাও।

 

জনপ্রিয়

মোহাম্মদপুরে ছিনতাইয়ের ঘটনায় অসদাচরণের বিষয়ে পুলিশের ‘দুঃখ প্রকাশ’

ঈদের লম্বা ছুটিতে কক্সবাজারে ৮০০ কোটি টাকার ব্যবসা!

০৪:৪৫:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫

মোহাম্মদ ইসহাক,  স্টাফ রিপোর্টার।। 

বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকতের নগরী কক্সবাজার। সরকারী কিংবা সাপ্তাহিক ছুটিসহ সবসময়ই পর্যটকে ভরপুর থাকে কক্সবাজার।
ঈদুল আযহার দীর্ঘ ছুটিতে অন্তত ৭ থেকে ৮ লাখ মানুষ কক্সবাজার ভ্রমণ করেছে। এতে করে কক্সবাজারে বিভিন্ন সেক্টরে ব্যবসা হয়েছে ৭/ ৮ কোটি টাকা।
তবে, কক্সবাজার আবাসিক হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার জানান, সাত দিনে আবাসিক হোটেলগুলোতে যেসব পর্যটক অবস্থান নিয়েছেন, তাদের হিসাব অনুযায়ী মোট সংখ্যা ৪ লাখের বেশি হবে না।
ঈদ উপলক্ষে কক্সবাজারে সাত দিনে ঘুরেছেন প্রায় ৪ লাখ পর্যটক। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও সংগঠনগুলোর ধারণা, এই সময়ে জেলার পর্যটন খাতে অন্তত ৪০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজারে ঈদের দিন ৭ জুন থেকে ১৩ জুন শুক্রবার পর্যন্ত পর্যটকের ব্যাপক সমাগম ঘটে। সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে ভিড় করেন হাজারো পর্যটক। এছাড়াও জেলার পর্যটন স্পট গুলোতেও পর্যটকরা ঘুরে বেড়িয়েছে।

তারা জেট স্কি, বিচ বাইক, ঘোড়ার পিঠে চড়া, কিটকট ভ্রমণ ও ফটোগ্রাফিতে অংশ নেন। পাশাপাশি তারা শুটকি, বার্মিজ পণ্য, শামুক-ঝিনুক, মুক্তার গহনা, আচারসহ নানা সামগ্রী কেনাকাটায়ও মেতে ওঠেন। ফলে ব্যস্ততা বেড়ে যায় সৈকতপাড়ের দোকানদার, হকার, ফটোগ্রাফার, জেট স্কি ও বিচ বাইক চালকদের।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, ‘পর্যটন সংশ্লিষ্ট পাঁচটি খাতে ব্যবসা বিবেচনায় নেয়া যায়—আবাসিক হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউজ, রেস্তোরাঁ ও অন্যান্য খাবারের দোকান, সৈকতকেন্দ্রিক সেবা (যেমন: কিটকট, বাইক, ঘোড়া, ফটোগ্রাফি), দোকানপাট (যেমন: শুটকি, বার্মিজ পণ্য), এবং পরিবহন (দূরপাল্লার ও অভ্যন্তরীণ)।’

তিনি জানান, কক্সবাজারে পর্যটকের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণে কোনো সরকারি বা বেসরকারি পরিসংখ্যান না থাকলেও ধারণা অনুযায়ী, “ঈদুল ফিতরে প্রায় ১২ লাখ পর্যটক এসেছিল এবং ১৩টি খাতে ১,০০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছিল। এবারে ঈদুল আযহার ছুটিতে ৭। ৮ লাখ পর্যটক আশা করছি এবং সবমিলিয়ে অন্তত ৭০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকার ব্যবসা হবে বলে বিশ্বাস করি।”

“কেবল হোটেল নয়, রেস্টুরেন্ট, দোকানপাট, বিচ অ্যাকটিভিটিজ, লোকাল ট্রান্সপোর্ট এবং অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলোতেও জমজমাট ব্যবসা হচ্ছে” -বলেন মি. চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘সরকারিভাবে আবাসিক হোটেলগুলোর তথ্য অনলাইনে সংগ্রহের মাধ্যমে পর্যটকের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা সম্ভব।’

কক্সবাজার আবাসিক হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার জানান, ঈদের প্রথম দিন কিছুটা কম ভিড় থাকলেও পরবর্তীতে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ে। সাত দিনে আবাসিক হোটেলগুলোতে যেসব পর্যটক অবস্থান নিয়েছেন, তাদের হিসাব অনুযায়ী মোট সংখ্যা ৪ লাখের বেশি হবে না।

কক্সবাজারে ৫০০টিরও বেশি হোটেল, রিসোর্ট, কটেজ ও গেস্ট হাউস রয়েছে, যেগুলোর দৈনিক ধারণক্ষমতা প্রায় ১,৮৭,০০০ জন বলে তথ্য দিয়ে হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতি।

হোটেল মালিকরা জানান, ১২ থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ৭০ হাজারের বেশি পর্যটক আসবেন। এসবসব মিলিয়ে এবারের ঈদে মোট পর্যটকের সংখ্যা ৯ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন তারা।

বর্তমানে জেলার পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউজ, কটেজ ও রিসোর্ট প্রায় পূর্ণ। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে পর্যটক সেবায় চলছে ব্যাপক ব্যস্ততা। একই সঙ্গে স্থানীয় রেস্টুরেন্টগুলোতেও জমজমাট অবস্থা। ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙা থাকায় খুশি ব্যবসায়ীরাও।