১০:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

মাদকাসক্ত ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ মা, বাঁচতে চান কারাগারে পাঠিয়ে

স্টাফ করেসপনডেন্ট, সিবিসি নিউজ ।।

কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের চন্দ্রিমা মাঠ এলাকায় মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতন থেকে জীবন বাঁচাতে নিজ সন্তানকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেছেন এক অসহায় মা। ছেলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।

অভিযোগকারী মা সেবিকা, পেশায় গৃহিণী, স্বামী মোঃ করিম। পরিবার সূত্রে জানা যায়, তার একমাত্র ছেলে মোহাম্মদ সাগর (২৫) দীর্ঘ এক বছর ধরে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সেবন করে আসছে। মাদকের টাকার জন্য প্রতিনিয়ত নিজের মা ও পরিবারের সদস্যদের ওপর চালাচ্ছেন অমানবিক নির্যাতন।

সেবিকা জানান, টাকা না দিলে সে আমার গায়ে হাত তোলে, ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। একবার মারধরের পর বুকের উপর পা দিয়ে জিভ টেনে ধরে ভয় দেখায়। প্রতিদিন দা হাতে আমাকে খুনের হুমকি দেয়। আমি, আমার দুই মেয়ে—কেউই তার হাত থেকে নিরাপদ নই।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, ছেলে রাতে ঘুমানোর সময় বালিশের নিচে ধারালো দা রেখে ঘুমায়। পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বহুবার আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ছেলেকে ভালো করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কোনো ফল হয়নি।

পরিস্থিতির চরম অবনতিতে গত ১৭ জুলাই তিনি লিখিত অভিযোগ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। ইউএনও অভিযোগটি সদর মডেল থানায় পাঠালেও এখনও পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে দাবি সেবিকার।

তিনি বলেন, আমি আর পারছি না। একমাত্র আশা ছিল প্রশাসন। কিন্তু এখনও যদি ব্যবস্থা না হয়, তাহলে হয়তো আমি বাঁচব না।
এদিকে, স্থানীয়রা জানান, মাদকসেবীদের দ্বারা পরিবারে নির্যাতনের এমন ঘটনা এখন প্রায়শ ঘটছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় অনেক পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে।

এ বিষয়ে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াছ খান বলেন, অভিযোগটি আমরা পেয়েছি। তদন্তের প্রক্রিয়া চলছে। প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সচেতন মহলের মতে, একজন মা যখন নিজ সন্তানকে কারাগারে পাঠানোর দাবি করেন, তখন সেটি শুধুমাত্র পারিবারিক নয়—সমাজের জন্যও গভীর উদ্বেগের বিষয়। এই ঘটনায় প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা অত্যাবশ্যক।

জনপ্রিয়

মাদকাসক্ত ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ মা, বাঁচতে চান কারাগারে পাঠিয়ে

মাদকাসক্ত ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ মা, বাঁচতে চান কারাগারে পাঠিয়ে

০২:৩৬:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫
স্টাফ করেসপনডেন্ট, সিবিসি নিউজ ।।

কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের চন্দ্রিমা মাঠ এলাকায় মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতন থেকে জীবন বাঁচাতে নিজ সন্তানকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেছেন এক অসহায় মা। ছেলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।

অভিযোগকারী মা সেবিকা, পেশায় গৃহিণী, স্বামী মোঃ করিম। পরিবার সূত্রে জানা যায়, তার একমাত্র ছেলে মোহাম্মদ সাগর (২৫) দীর্ঘ এক বছর ধরে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সেবন করে আসছে। মাদকের টাকার জন্য প্রতিনিয়ত নিজের মা ও পরিবারের সদস্যদের ওপর চালাচ্ছেন অমানবিক নির্যাতন।

সেবিকা জানান, টাকা না দিলে সে আমার গায়ে হাত তোলে, ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। একবার মারধরের পর বুকের উপর পা দিয়ে জিভ টেনে ধরে ভয় দেখায়। প্রতিদিন দা হাতে আমাকে খুনের হুমকি দেয়। আমি, আমার দুই মেয়ে—কেউই তার হাত থেকে নিরাপদ নই।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, ছেলে রাতে ঘুমানোর সময় বালিশের নিচে ধারালো দা রেখে ঘুমায়। পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বহুবার আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ছেলেকে ভালো করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কোনো ফল হয়নি।

পরিস্থিতির চরম অবনতিতে গত ১৭ জুলাই তিনি লিখিত অভিযোগ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। ইউএনও অভিযোগটি সদর মডেল থানায় পাঠালেও এখনও পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে দাবি সেবিকার।

তিনি বলেন, আমি আর পারছি না। একমাত্র আশা ছিল প্রশাসন। কিন্তু এখনও যদি ব্যবস্থা না হয়, তাহলে হয়তো আমি বাঁচব না।
এদিকে, স্থানীয়রা জানান, মাদকসেবীদের দ্বারা পরিবারে নির্যাতনের এমন ঘটনা এখন প্রায়শ ঘটছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় অনেক পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে।

এ বিষয়ে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াছ খান বলেন, অভিযোগটি আমরা পেয়েছি। তদন্তের প্রক্রিয়া চলছে। প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সচেতন মহলের মতে, একজন মা যখন নিজ সন্তানকে কারাগারে পাঠানোর দাবি করেন, তখন সেটি শুধুমাত্র পারিবারিক নয়—সমাজের জন্যও গভীর উদ্বেগের বিষয়। এই ঘটনায় প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা অত্যাবশ্যক।